চিরকাল কেউ ক্ষমতায় থাকে না এবং বাংলাদেশে কখন কী ঘটে, তা বলা যায় না’, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন একটি বক্তব্য কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। খবর কালের কণ্ঠের
গত ২৭ আগস্ট স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের আলোচনাসভায় করা তাঁর এই মন্তব্যে বিরোধী দল যেমন নড়েচড়ে বসে, তেমনি সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরে তৈরি হয় উদ্বেগ। তাদের প্রশ্ন, হঠাৎ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের এই প্রভাবশালী মন্ত্রী কেন এমন কথা বললেন।
এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। জানতে চাওয়া হয়, ‘হঠাৎ করে কেন আপনি এ ধরনের মন্তব্য করলেন?’ জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাঁর মনে হচ্ছে না তিনি সেদিন নতুন কিছু বলেছেন, ‘হঠাৎ তো নয়, আমার নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) প্রায়ই এই বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
আমি তাঁর কথাই বলেছি।’ ‘তার পরও আপনি কি কোনো আশঙ্কা দেখছেন, যে কারণে এ ধরনের মন্তব্য?’ এই প্রশ্নের উত্তর ওবায়দুল কাদের দিলেন এভাবে, ‘আমি কোনো রকম চিন্তা থেকে এ কথা বলিনি। তা ছাড়া ওই দিনের বক্তব্যে আমি বিষয়টি পরিষ্কার করেছি।’
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ওই আলোচনাসভায় জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দেওয়া সেই বক্তব্যে তিনি আরো বলেছিলেন, ‘যাঁরা দল করেন, তাঁরা মনে রাখবেন, দলে যদি ঐক্যকে গুরুত্ব না দেন, নিজেদের মধ্যে কলহ-কোন্দল থাকে, তাহলে দুঃসময়ে প্রতিপক্ষ কোন্দলের ওপর আঘাত হানবে। এ দেশে কখন কী ঘটে, বলা যায় না। চোখের পলকে বাংলাদেশে ১৫ আগস্ট ঘটে গেছে। হঠাৎ করে ২১ আগস্ট।
চিরজীবন আমরা ক্ষমতায় থাকব, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাবেন না, আমরাও ভাবি না। চিরকাল কেউ ক্ষমতায় থাকে না। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। যখন ক্ষমতায় থাকবেন না, প্রতিপক্ষ প্রতিশোধ নেবে।’ প্রতারক সাহেদের মতো আর কেউ যেন আওয়ামী লীগের কোনো উপকমিটিতে স্থান না পান, সে ব্যাপারে গত বুধবার অনুষ্ঠিত দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কিভাবে, কারা এই বিতর্কিতদের উপকমিটিতে নিয়েছিল। তিনি উত্তরে বলছেন, এই মুহূর্তে এ ধরনের কেউ নেই। আর যাতে এ ধরনের ব্যক্তি উপকমিটিতে ঢুকতে না পারে, সে জন্য বলা হয়েছে।
উপকমিটি ছাড়াও আওয়ামী লীগের যেসব সহযোগী সংগঠন রয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে কী হবে? কোনো সহযোগী সংগঠনেও তাঁরা (সাহেদের মতো) প্রবেশ করতে পারবেন না, ওবায়দুল কাদেরের স্পষ্ট ঘোষণা।